পুতিন-ট্রাম্প শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ
- By Jamini Roy --
- 25 January, 2025
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘ প্রায় তিন বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ইতি টানতে বড় উদ্যোগ নিতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চলমান সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “আমি সত্যিই চাই, পুতিনের সঙ্গে দেখা করে যুদ্ধ বন্ধ করি। অর্থনীতির জন্য নয় বা রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য নয়, এই যুদ্ধে লাখ লাখ জীবন ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের সত্যিই এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।” তিনি আরও জানান, যুদ্ধক্ষেত্রে সেনারা মারা যাচ্ছে, আর এটি দেখার সময় ফুরিয়ে এসেছে।
পরে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “আমি শুনেছি, পুতিন আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমরা যত দ্রুত সম্ভব, বৈঠকের ব্যবস্থা করব।”
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন। এরপর এই যুদ্ধ ভয়াবহ সংঘাতে রূপ নেয়। পাল্টাপাল্টি হামলায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, আর লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।
এই যুদ্ধ শুধু ইউক্রেন আর রাশিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। ইউরোপসহ বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং সামরিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে এই সংঘাত।
ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সরব ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি প্রায়ই দাবি করতেন, প্রেসিডেন্ট থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সংঘাতের সমাধান করে ফেলতেন।
সম্প্রতি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প এই যুদ্ধ বন্ধে তৎপরতা শুরু করেছেন। তিনি বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার আয়োজন চলছে। শুধু তাই নয়, রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধ না করে, তবে তাদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, পুতিনও আলোচনায় বসতে আগ্রহী। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়া মিশ্র হতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলো একদিকে শান্তি আলোচনার উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিচ্ছে।
এই দীর্ঘ যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাসী এক শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রত্যাশা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুতিন ও ট্রাম্পের এই বৈঠক যদি সফল হয়, তবে এটি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সমাপ্তি এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে পুনর্গঠনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।